সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতা রূপে শুধুমাত্র মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষের ইতিহাসে নয় সমগ্র এশিয়ার ইতিহাসে সুলতান মামুদের তুলনায় মহম্মদ ঘুরির স্থান অনেক উচ্চ। গজনীর শাসক সুলতান মামুদ ১০০০-১০২৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ১৭ বার
ভারত আক্রমণ করেছিলেন। তাঁর ভারত অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিপুল ধনরত্ন লুণ্ঠন করা। যদিও তিনি বহু মন্দির ও দেবমূর্তি ধ্বংস করে অবাধে ধনরত্ন লুণ্ঠন করেছিলেন কিন্তু হিন্দুদের ধর্মান্তরিত করার কোন চেষ্টা করেননি।
মহম্মদ ঘুরি ছিল উচ্চভিলাষী। ভারত বিজয়ে মহম্মদ ঘুরির উদ্দেশ্য ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এই কারণে তিনি প্রথমে পাঞ্জাবে গজনী রাজ্যের অবসান ঘটান। প্রথমে থেকেই মহম্মদ ঘুরি সুপরিকল্পনা ও সর্তকতা বজায় রেখে ভারতে মুসলমান সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সংকল্প নিয়ে অগ্রসর হয়েছেন।
সুলতান মামুদের ক্ষেত্রে ভারতে সাম্রাজ্য স্থাপনের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। রোমিলা থাপারের মতে, সুলতান মামুদের ভারত আক্রমণের লক্ষ্য ছিল এদেশের ঐশ্বর্য ও পাঞ্জাবের উর্বর সমভূমি অধিকার করা। কারণ মামুদের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত পার্বত্য অঞ্চলের তুলনায় পাঞ্জাব সমভূমি ছিল খুবই শস্যশ্যামল। এছাড়া এসময় ভারত অপেক্ষা মধ্য এশিয়ার সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থাকায় মামুদ মধ্য এশিয়ায় রাজত্ব করা অধিক শ্রেয় মনে করেছিলেন।
অধ্যাপক হাবিব-এর মতে, সুলতান মামুদের আক্রমণের ফলে আধ্যাত্মিকতার দেশ ভারতবর্ষে ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছিল। অপরদিকে মহম্মদ ঘুরি পরোক্ষভাবে ভারতের ইসলামী শাসন প্রবর্তনের সূচনা করেন।
0 Comments